ঢাকা,সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

বাঁশখালীতে কলেজছাত্রীর মৃত্যু নিয়ে ধূম্রজাল

বিয়ে হয় তিন মাস আগে, স্বামীসহ থাকতেন মায়ের সাথে

বাঁশখালী প্রতিনিধি ::

বাঁশখালী পৌরসভার আস্করিয়াপাড়া এলাকায় এক কলেজ ছাত্রীর মৃত্যুকে ঘিরে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। গত তিন মাস আগে এ কলেজ ছাত্রীর সাথে একই এলাকার এক প্রবাসীর বিয়ে হলেও তার পিতার বাড়িতে মায়ের সাথে থাকতেন । জানা যায়, বাঁশখালী পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের আস্করিয়াপাড়া এলাকায় নুরুল ইসলামের কন্যা আমেনা বেগমের (১৮) সাথে একই এলাকার মনির আহমদের পুত্র প্রবাসী মো.ওবায়দুরের বিয়ে হয়। গত তিন মাস আগে বিয়ে হলেও শ্বশুর বাড়িতে তুলে না নেয়ায় পিতামাতার সাথে স্বামীসহ থাকতেন। শুক্রবার গভীর রাতে মা অসুস্থ হলে মায়ের সেবা করে রাত দু’টায় বাথরুমে যায়। বাথরুম থেকে আসতে দেরী হওয়ায় সেখানে গিয়ে দেখা যায়– আমেনা বাথরুমে বেহুশ হয়ে পড়ে আছেন। দ্রুত তাঁকে বাঁশখালী হাসপাতালে নেয়া হলে দায়িত্বরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর হাসপাতালের পক্ষ থেকে থানায় জানিয়ে দেয়া হয় মৃত্যুর খবরটি। রাতে পরিবারের লোকজন লাশ বাড়ি নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ এসে লাশ থানায় নিয়ে যায় । এদিকে সকালে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার ও কলেজের শত শত লোকজন ও ছাত্র ছাত্রী এসে থানায় জড়ো হয়। তারা ময়না তদন্ত ছাড়া লাশ নিতে চাইলে পুলিশ অস্বীকৃতি জানান। এসময় লোকজন বিক্ষোভ করতে চাইলে পুলিশ তাদের ধাওয়া করে। এরপর লাশ ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ। এব্যাপারে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, গভীর রাতে হাসপাতালে আনা আমেনা বেগমের গলায় ও হাতে আঘাতের চিহ্ন থাকায় আমরা থানাকে অবহিত করি। পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যায়। সরকারি আলাওল কলেজের অধ্যক্ষ মো. ইদ্রিস জানান– আমেনা বেগম কলেজের মানবিক বিভাগের ১ম বর্ষের ছাত্রী।

এদিকে মেয়ের মা নুরুন নাহার বেগম বলেন, ওমান প্রবাসী মো. ওবায়দুলের সাথে গত তিন মাস পূর্বে আমেনার বিয়ে হয়। এরপর থেকে মেয়ে–জামাই দু’জনই আমার বাড়িতেই থাকত। আমি নিজেও ডায়বেটিস রোগী। আমার বাড়িতে শুধু আমরা তিনজনই ছিলাম। শুক্রবার গভীর রাতে আমি অসুস্থ হওয়ায় মেয়েকে ডাকি। তখন মেয়ে ও মেয়ের জামাই দু’জনই আমার কাছে আসে এবং আমাকে পানি খেতে দেয়। মেয়ের জামাই আমার পাশে বসা অবস্থায় মেয়ে বাথরুমে যায়। বেশ কিছুক্ষণ যাবত বাথরুম থেকে বের না হওয়ায় আমি তাকে ডাকাডাকি করলে তার কোন সাড়া না পাওয়ায় আমি এবং তার স্বামী দুইজনই গিয়ে বাথরুমের দরজা ভেঙ্গে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে বাঁশখালী হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে কর্তব্যরত চিকিৎক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে আমরা তার লাশ বাড়িতে আনতে চাইলে পুলিশ এসে থানায় নিয়ে যায়।

এবিষয়ে বাঁশখালী থানার ওসি সালাউদ্দীন হীরা বলেন, ডাক্তারের তথ্য মতে মৃত্যুটা স্বাভাবিক নয় । তাই লাশের ময়না তদন্তের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এব্যাপারে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে লাশের ময়না তদন্ত শেষে আস্করিয়া পেটান আলী মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

পাঠকের মতামত: